ধর্মীয় রাজনৈতিক ও অরাজনৈতিক সংগঠনের বিভিন্ন 'দফার রাজনীতির' চাপে পড়েছে
সরকার। রাষ্ট্রের সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ও অগণতান্ত্রিক বেশ কিছু দফা
থাকার পরও সংগঠনগুলো তাদের এ দাবি মেনে নিতে প্রতিনিয়ত চাপ প্রয়োগ করছে
সরকারকে। নানা কর্মসূচি পালন ও ঘোষণার মধ্য দিয়ে তারা এক ধরনের চরম
রাজনৈতিক পরিবেশ সৃষ্টি করছে। ফলে দফা ভিত্তিক এ রাজনীতি ভাবিয়ে তুলছে
সরকারকে।
এর মধ্যে গণজাগরণ মঞ্চের ৬ দফা, ধর্মীয় সংগঠন আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের ১২ দফা, হেফাজতে ইসলামের ১৩ দফা এবং রাজনৈতিক দল ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ ২১ দফা ঘোষণা করে।
আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা'আত, ইসলামিক ফ্রন্ট এবং হেফাজতে ইসলাম মতাদর্শিক দিক দিয়ে দুই পক্ষের দুই মেরুতে অবস্থান। এখন দুই পক্ষই সরকারকে দফা ১২ ও ১৩ দিয়ে তা বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছে। একদিকে হেফাজত অন্যদিকে আহলে সুন্নাত। দুই পক্ষই ধর্মীয় অনুভূতির কথা বলছে। এ নিয়ে বিপাকে সরকার। চার পক্ষের দাবি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আহলে সুন্নাত ও ইসলামিক ফ্রন্টের দাবির মধ্যে অনেক দফার মিল রয়েছে। গণজাগরণ মঞ্চ, আহলে সুন্নাত ও ইসলামিক ফ্রন্ট যুদ্ধাপরাধীদের বিচার দাবি করছে। হেফাজত এ দাবি সম্পর্কে নিশ্চুপ। আবার গণজাগরণ মঞ্চ ছাড়া তিন পক্ষই আল্লাহর ওপর আস্থা ও পূর্ণ বিশ্বাস রাখার বিষয়টি সংবিধানে সংযোজন করার দাবি জানায়। আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা'আত 'সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপের মাধ্যমে দেশকে চলমান গভীর সংকট থেকে উত্তরণের পদক্ষেপ গ্রহণ, দেশ, জাতি ও মানবতার বিরুদ্ধে ধ্বংসাত্দক এবং নৈরাজ্যকর কর্মসূচি হরতাল বন্ধে জাতীয় সংসদে আইন পাসের' দাবি করছে। হেফাজতের এ ধরনের দাবি নেই। তবে আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্তা, ইসলাম ও নবী (সা.) নিয়ে কটূক্তিদের সর্বোচ্চ শাস্তি, কাদিয়ানিদের অমুসলিম ঘোষণার কথা দুই পক্ষের দাবির মধ্যেই রয়েছে। হেফাজত সম্পূর্ণ নারী নীতি বাতিলের দাবি করলেও আহলে সুন্নাত কেবল কোরআন-সুন্নাহ বিরোধী অংশ বিশেষ বাদ দেওয়ার দাবি জানায়। একই দাবি ইসলামিক ফ্রন্টেরও। আহলে সুন্নাত 'স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের সরাসরি বিরোধিতাকারী জামায়াতে ইসলামী নিষিদ্ধ, যুদ্ধাপরাধের বিচার দাবি করলেও হেফাজত এ দাবি করে নাই। শাহবাগের আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত সবাইকে নাস্তিক ও মুরতাদ মনে করে না ইসলামিক ফ্রন্ট ও আহলে সুন্নাত। তারা মনে করে যারা ব্লগে ইসলাম ও নবী (সা.) নিয়ে কটূক্তি করেছেন চিহ্নিত সেই সব ব্লগাররাই নাস্তিক। পক্ষান্তরে হেফাজতে ইসলাম মনে করে 'কথিত শাহবাগী আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী সবাই স্বঘোষিত নাস্তিক-মুরতাদ'। ইসলামিক ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব সোলায়মান ফরিদ বলেন, আমাদের বক্তব্য স্পষ্ট। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার, চিহ্নিত ব্লগারদের শাস্তি, ইসলাম ও নবী (সা.)-এর শানে কটূক্তিকারী, কওমি মাদ্রসার আলেম কর্তৃক নবী (সা.)-এর শানে অবমাননাকর বক্তব্যদানকারীদের শাস্তি চাই। কারণ নবী (সা.) নিয়ে তারাই বহু বছর আগে থেকেই কটূক্তি করে আসছে। আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা'আতের প্রেসিডিয়াম সদস্য এম এ মতিন বলেন, আমরা যে ১২ দফা দিয়েছি সেগুলো সম্পূর্ণ নিজস্ব অবস্থান থেকে ইসলাম, দেশ, জাতি এবং দেশের বর্তমান অস্থিতিশীল পরিবেশ নিরসনের লক্ষ্যে। এখানে আমরা কাউকে প্রতিপক্ষ মনে করি না। আর আমাদের দাবি ন্যায্য, জরুরি এবং দেশ-জাতির জন্য কল্যাণকর। আমরা সরকারের কাছে অনুরোধ জানাব তারা যেন আমাদের দাবিগুলো বিবেচনা করে দেশে শান্তি পরিবেশ ফিরিয়ে আনে। তবে পর্যবেক্ষকরা মনে করেন, এসব দাবির মধ্যে কিছু দফা রাষ্ট্র ও গণতন্ত্রের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। ফলে এ সব দাবি বাস্তবায়ন রাষ্ট্রের পক্ষে সম্ভব হবে না। এর মধ্যে প্রকাশ্যে নারী-পুরুষের বিচরণ, মোমবাতি প্রজ্বলন, দেশব্যাপী রাস্তার মোড়ে ও কলেজ-ভার্সিটিতে ভাস্কর্যের নামে মূর্তি স্থাপন বন্ধ, নারী নীতি সম্পূর্ণ বাতিল করা, কাদিয়ানি ইস্যুসহ বিভিন্ন দাবি বাস্তবায়ন করা রাষ্ট্রের পক্ষে সম্ভব হবে না। সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন চট্টগ্রামের আহ্বায়ক প্রফেসর মু. সিকান্দার খান বলেন, বিভিন্ন পক্ষের দেওয়া দাবিগুলো জনগণ, রাষ্ট্র বা সরকারের জন্য কোনো সুফল বয়ে আনবে না। এগুলো যে যার মতো করে উপস্থাপন করছে, এর মাধ্যমে যে যার স্থান দখল করে নিচ্ছে। এগুলো তাদের নিজস্ব ধারণ ও বর্ণনা। দেশ ও জাতিকে এসব দাবি দিয়ে কোনোভাবেই সামনের দিকে নিয়ে যাবে না।
Link
এর মধ্যে গণজাগরণ মঞ্চের ৬ দফা, ধর্মীয় সংগঠন আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের ১২ দফা, হেফাজতে ইসলামের ১৩ দফা এবং রাজনৈতিক দল ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ ২১ দফা ঘোষণা করে।
আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা'আত, ইসলামিক ফ্রন্ট এবং হেফাজতে ইসলাম মতাদর্শিক দিক দিয়ে দুই পক্ষের দুই মেরুতে অবস্থান। এখন দুই পক্ষই সরকারকে দফা ১২ ও ১৩ দিয়ে তা বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছে। একদিকে হেফাজত অন্যদিকে আহলে সুন্নাত। দুই পক্ষই ধর্মীয় অনুভূতির কথা বলছে। এ নিয়ে বিপাকে সরকার। চার পক্ষের দাবি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আহলে সুন্নাত ও ইসলামিক ফ্রন্টের দাবির মধ্যে অনেক দফার মিল রয়েছে। গণজাগরণ মঞ্চ, আহলে সুন্নাত ও ইসলামিক ফ্রন্ট যুদ্ধাপরাধীদের বিচার দাবি করছে। হেফাজত এ দাবি সম্পর্কে নিশ্চুপ। আবার গণজাগরণ মঞ্চ ছাড়া তিন পক্ষই আল্লাহর ওপর আস্থা ও পূর্ণ বিশ্বাস রাখার বিষয়টি সংবিধানে সংযোজন করার দাবি জানায়। আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা'আত 'সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপের মাধ্যমে দেশকে চলমান গভীর সংকট থেকে উত্তরণের পদক্ষেপ গ্রহণ, দেশ, জাতি ও মানবতার বিরুদ্ধে ধ্বংসাত্দক এবং নৈরাজ্যকর কর্মসূচি হরতাল বন্ধে জাতীয় সংসদে আইন পাসের' দাবি করছে। হেফাজতের এ ধরনের দাবি নেই। তবে আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্তা, ইসলাম ও নবী (সা.) নিয়ে কটূক্তিদের সর্বোচ্চ শাস্তি, কাদিয়ানিদের অমুসলিম ঘোষণার কথা দুই পক্ষের দাবির মধ্যেই রয়েছে। হেফাজত সম্পূর্ণ নারী নীতি বাতিলের দাবি করলেও আহলে সুন্নাত কেবল কোরআন-সুন্নাহ বিরোধী অংশ বিশেষ বাদ দেওয়ার দাবি জানায়। একই দাবি ইসলামিক ফ্রন্টেরও। আহলে সুন্নাত 'স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের সরাসরি বিরোধিতাকারী জামায়াতে ইসলামী নিষিদ্ধ, যুদ্ধাপরাধের বিচার দাবি করলেও হেফাজত এ দাবি করে নাই। শাহবাগের আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত সবাইকে নাস্তিক ও মুরতাদ মনে করে না ইসলামিক ফ্রন্ট ও আহলে সুন্নাত। তারা মনে করে যারা ব্লগে ইসলাম ও নবী (সা.) নিয়ে কটূক্তি করেছেন চিহ্নিত সেই সব ব্লগাররাই নাস্তিক। পক্ষান্তরে হেফাজতে ইসলাম মনে করে 'কথিত শাহবাগী আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী সবাই স্বঘোষিত নাস্তিক-মুরতাদ'। ইসলামিক ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব সোলায়মান ফরিদ বলেন, আমাদের বক্তব্য স্পষ্ট। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার, চিহ্নিত ব্লগারদের শাস্তি, ইসলাম ও নবী (সা.)-এর শানে কটূক্তিকারী, কওমি মাদ্রসার আলেম কর্তৃক নবী (সা.)-এর শানে অবমাননাকর বক্তব্যদানকারীদের শাস্তি চাই। কারণ নবী (সা.) নিয়ে তারাই বহু বছর আগে থেকেই কটূক্তি করে আসছে। আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা'আতের প্রেসিডিয়াম সদস্য এম এ মতিন বলেন, আমরা যে ১২ দফা দিয়েছি সেগুলো সম্পূর্ণ নিজস্ব অবস্থান থেকে ইসলাম, দেশ, জাতি এবং দেশের বর্তমান অস্থিতিশীল পরিবেশ নিরসনের লক্ষ্যে। এখানে আমরা কাউকে প্রতিপক্ষ মনে করি না। আর আমাদের দাবি ন্যায্য, জরুরি এবং দেশ-জাতির জন্য কল্যাণকর। আমরা সরকারের কাছে অনুরোধ জানাব তারা যেন আমাদের দাবিগুলো বিবেচনা করে দেশে শান্তি পরিবেশ ফিরিয়ে আনে। তবে পর্যবেক্ষকরা মনে করেন, এসব দাবির মধ্যে কিছু দফা রাষ্ট্র ও গণতন্ত্রের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। ফলে এ সব দাবি বাস্তবায়ন রাষ্ট্রের পক্ষে সম্ভব হবে না। এর মধ্যে প্রকাশ্যে নারী-পুরুষের বিচরণ, মোমবাতি প্রজ্বলন, দেশব্যাপী রাস্তার মোড়ে ও কলেজ-ভার্সিটিতে ভাস্কর্যের নামে মূর্তি স্থাপন বন্ধ, নারী নীতি সম্পূর্ণ বাতিল করা, কাদিয়ানি ইস্যুসহ বিভিন্ন দাবি বাস্তবায়ন করা রাষ্ট্রের পক্ষে সম্ভব হবে না। সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন চট্টগ্রামের আহ্বায়ক প্রফেসর মু. সিকান্দার খান বলেন, বিভিন্ন পক্ষের দেওয়া দাবিগুলো জনগণ, রাষ্ট্র বা সরকারের জন্য কোনো সুফল বয়ে আনবে না। এগুলো যে যার মতো করে উপস্থাপন করছে, এর মাধ্যমে যে যার স্থান দখল করে নিচ্ছে। এগুলো তাদের নিজস্ব ধারণ ও বর্ণনা। দেশ ও জাতিকে এসব দাবি দিয়ে কোনোভাবেই সামনের দিকে নিয়ে যাবে না।
Link